কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সংঘটিত ‘গণহত্যার’ ঘটনা থেকে দেশ ও বিশ্ববাসীর দৃষ্টি ভিন্ন দিকে সরাতে সরকার ১৪ দলের বৈঠকে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে দাবি করেছে দলটি। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান এ সিদ্ধান্তকে হঠকারী, এখতিয়ারবহির্ভূত, বেআইনি ও সংবিধানবিরোধী বলে মন্তব্য করেন।
নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তকে হঠকারী ও বেআইনি বলেছে জামায়াত
কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সংঘটিত ‘গণহত্যার’ ঘটনা থেকে দেশ ও বিশ্ববাসীর দৃষ্টি ভিন্ন দিকে সরাতে সরকার ১৪ দলের বৈঠকে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে দাবি করেছে দলটি। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান এ সিদ্ধান্তকে হঠকারী, এখতিয়ারবহির্ভূত, বেআইনি ও সংবিধানবিরোধী বলে মন্তব্য করেন।
গত সোমবার আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় জোটের বৈঠকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়।
বিবৃতিতে জামায়াতের আমির এ সিদ্ধান্তের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ১৪-দলীয় জোট একটি রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম। একটি রাজনৈতিক দল বা জোট অন্য একটি রাজনৈতিক দলের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। দেশের আইন ও সংবিধান কাউকে এ এখতিয়ার দেয়নি। তিনি বলেন, কোনো দল বা জোট অন্য কোনো দলকে নিষিদ্ধ করার ধারা চালু হলে এক দল অন্য দলকে নিষিদ্ধ করতে থাকবে। তখন রাষ্ট্রের শৃঙ্খলা বলে কিছু থাকবে না।
‘জাতীয় ঐক্যে’ যোগদানের সম্মতি
এদিকে পৃথক বিবৃতিতে বিএনপির ডাকা ‘জাতীয় ঐক্যে’ যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন দলের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম মা’ছুম। তিনি বলেন, ছাত্রদের বুকে গুলি করে অনেক বাবা-মাকে সন্তানহারা করেছে। সরকার নিজেই দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে এখন বিরোধী দলের ওপর দোষ চাপানোর ষড়যন্ত্র করছে। মা’ছুম বলেন, ‘এই পরিস্থিতিতে বিএনপির মহাসচিব জাতীয় ঐক্যের যে আহ্বান জানিয়েছেন, আমরা তাঁকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। একই সঙ্গে জাতীয় ঐক্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর যোগদানের বিষয়ে আমরা সম্মতি জ্ঞাপন করছি।’
সংগঠন অব্যাহত রাখবে ছাত্রশিবির
আরেক বিবৃতিতে ১৪ দলের বৈঠকে ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন সংগঠনের সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম। তাঁরা বলেছেন, এটা একটি গণতান্ত্রিক দেশের জন্য আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। দেশবাসী এই বেআইনি, আত্মঘাতী ও হঠকারী সিদ্ধান্ত মেনে নেবে না। বিবৃতিতে শিবিরের সভাপতি ও সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, সত্য ও সুন্দরের পথে ছাত্রশিবিরের যে পথচলা, তা অব্যাহত থাকবে।
বিবৃতিতে শিবিরের দুই নেতা বলেন, চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে রাজনৈতিকভাবে ব্যর্থ হয়ে অবৈধ সরকার এখন দিশাহারা। তারা এই আন্দোলনে শিক্ষার্থী ও জনসাধারণের ওপর রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে ব্যবহার করে যে পাশবিক গণহত্যা চালিয়েছে তার নজির পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি নেই। দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ ও বিশ্ববিবেক তাদের এই গণহত্যার বিরুদ্ধে ধিক্কার জানাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে জনগণের দৃষ্টি ও প্রেক্ষাপট ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করতে সরকার শুরু থেকেই ছাত্রশিবিরসহ বিরোধী দলের ওপর ক্রমাগত দোষারোপ করে যাচ্ছে। তাদের অপপ্রচার জনগণের কাছে বিশ্বাসযোগ্যতা না পাওয়ায় তারা ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করার আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। তাদের হঠকারী সিদ্ধান্ত গণমানুষের ইচ্ছার প্রতিফলন নয়।
Subscribe to Our Newsletter
Keep in touch with our news & offers